একের পর এক নারীকে ধর্ষণ করে খুন করাই ছিল তার নেশা। অবশেষে সিরিয়াল কিলার হিসেবে অভিযুক্ত কামরুজ্জামানকে দোষী সাব্যস্ত করল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কালনা আদালত।
এক নাবালিকাকে ধর্ষণের পর খুন করার মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালতের বিচারক এই রায় দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আগামী সোমবার তার সাজা ঘোষণা করা হবে। একই কায়দায় একের পর এক নারীকে খুনের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল। এক বছর মামলা চলার পর কামরুজ্জামানকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত।
গত কয়েক বছর ধরে কালনা মহকুমা জুড়ে একের পর এক নারীকে চেন দিয়ে পেঁচিয়ে মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে খুন করা হচ্ছিল। একই কায়দায় একের পর খুনের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কুল-কিনারা করতে না পেরে চিন্তিত হয়ে পড়ে পুলিশও।
গত বছর ৩০ মে কালনা থানার সিঙ্গের কোনে বিডিও অফিস সংলগ্ন এলাকায় এক দশম শ্রেণির ছাত্রীকে বাড়িতে একলা পেয়ে মারধর ধর্ষণ ও পাশবিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগে কামরুজ্জামানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বেশ কয়েকদিন পর বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়।
ওই নাবালিকা বাড়িতে মায়ের সঙ্গে থাকতো। মা গৃহ পরিচারিকার কাজ করতেন। সেদিন দুপুরে ওই ছাত্রীর ঘরে একলা থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে বাড়িতে ঢুকেছিল অভিযুক্ত কামরুজ্জামান। বিকেলে বাড়ি ফিরে মেয়েকে রক্তাক্ত ও অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পান মা।
কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওই ছাত্রী একলা আছে বুঝে বাড়িতে ঢুকে পড়ে সে। এরপর ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের পাশাপাশি তার মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে সে।
শ্বাসরোধ করে খুনেরও চেষ্টা হয়। ওই ছাত্রী অচৈতন্য হয়ে পড়লে মৃত্যু হয়েছে ভেবে বাড়িতে লুটপাট চালিয়ে অভিযুক্ত চম্পট দেয়। ২ জুন কালনার কাখুঁরিয়া এলাকা থেকে কামরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে কালনা থানার পুলিশ।
অভিযুক্ত কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে সিঙ্গের কোনে নাবালিকাকে খুন ধর্ষণ লুটপাটসহ পাঁচটি ধারায় মামলা করা হয়। এক বছর মামলা চলার পর সিঙ্গের কোনে ছাত্রীকে খুন ধর্ষণসহ অন্যান্য ধারায় শুনানির পর কালনা অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালতের বিচারক তপন কুমার মন্ডল অভিযুক্ত কামরুজ্জামানকে দোষী সাব্যস্ত করেন।
তবে তার বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে দোষীসাব্যস্ত কামরুজ্জামান।